অনেকের কাছে পুলিশ মানেই ভয়ংকর, বদমেজাজি ও খিটখিটে স্বভাবের একদল মানুষ। কিন্তু তাঁদের এই স্বভাব বা আচরণের পেছনের কারণটা তাঁরা ভেবে দেখেন না।
বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের পরিচালিত গবেষণা ও জরিপে দেখা গেছে, রাত জেগে কাজ করা পুলিশ সদস্যরা অনেক ঝুঁকিপূর্ণ জীবনযাপন করেন। জার্নাল অব দ্য আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের জরিপে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। সংস্থাটি পাঁচ হাজার পুলিশ কর্মকর্তার ওপর জরিপ চালায়। সেখানে দেখা গেছে, ৪০ শতাংশ পুলিশই ঘুমের সমস্যায় ভোগেন। কম ঘুমের কারণেই তাঁরা যখন-তখন রেগে যান। শুধু তা-ই নয় এ কারণে তাঁরা মোটা হয়ে যান, ভোগেন ডায়াবেটিস ও হূদরোগে।
সবচেয়ে ভয়ের কথা হলো, কম ঘুমানোর কারণে ৪৬ শতাংশ পুলিশ গাড়ি চালাতে চালাতে ঘুমিয়ে পড়েন। ২৬ শতাংশ পুলিশই জানান, মাসে দুবার তাঁরা এ ধরনের সমস্যায় পড়েছেন। এমনকি যেসব পুলিশকে রাতে কম জাগতে হয় তাঁদের তুলনায় যাঁরা বেশি জাগেন তাঁদের আচরণেও সমস্যা দেখা যায়।
বোস্টনের হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের ঘুম-বিষয়ক গবেষক অধ্যাপক চার্লস এ সিজেলার বলেন, শুধু পুলিশ নয় যেসব পেশায় রাত জাগতে হয়, সে ধরনের সব পেশাজীবীর ওপর এ ধরনের গবেষণা করা দরকার। চার হাজার ৮০০ জন মার্কিন পুলিশ কর্মকর্তা ও ১৫০ জন কানাডিয়ান পুলিশ কর্মকর্তার ওপর জরিপ চালানো হয়।
জরিপে দেখা গেছে, কাজের প্রয়োজনে অনেক পুলিশকে দীর্ঘ সময় জেগে থাকতে হয়। অনেক সময় অতিরিক্ত কাজও করতে হয়। ১৫ শতাংশ পুলিশ কর্মকর্তাকে দিনে ১৪ থেকে ১৬ ঘণ্টা কাজ করতে হয়। এমনকি অনেককে দিনের পালা শেষে রাতের পালায়ও কাজ করতে হয়। এ কারণে তাঁরা ঠিকমতো ঘুমানোর সময় পান না। আর এ কারণে তাঁদের বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। যেমন তাঁরা ডায়াবেটিস, হূদরোগ ও হতাশায় ভোগেন।
জরিপে দেখা গেছে, কম ঘুমানো ১৮ শতাংশ পুলিশ বলেন, তাঁদের কাজ করতে সমস্যা হয়। ২৪ শতাংশ নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। ৩৪ শতাংশের কথায় কথায় মেজাজ খারাপ হয়। ফিলাডেলফিয়ার ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়ার গবেষক মাইকেল এ গ্রান্ডনার বলেন, যারা ঠিকমতো ঘুমাতে পারে না তাদের চিন্তাশক্তি লোপ পায়। এমনকি অনেকে গাড়ি চালাতে চালাতে ঘুমিয়েও পড়েন।
তবে গবেষক ড. সিজলার শুধু সমস্যা নয়, সমাধানের পথও বাতলে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, শরীরচর্চা এর সবচেয়ে ভালো সমাধান। শরীরচর্চা করলে ঘুমসংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যার সমাধান হবে। টাইম অনলাইন অবলম্বনে।
সূত্র: প্রথমআলো.কম, ২৩/১২/২০১১
No comments:
Post a Comment