কেবল আবেগ ছাড়া আমি সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করতে পারি—আইরিশ কবি অস্কার ওয়াইল্ডের এই উক্তি সত্যি হতে চলেছে তাঁর ভক্তদের বেলায়ও। ভক্তদের ভালোবাসার অত্যাচার থেকে অস্কার ওয়াইল্ডের সমাধিকে রক্ষা করতে তাই ফ্রান্সের সরকারকে নিতে হচ্ছে নানা পদক্ষেপ। ভক্তরা ভালোবাসেন অস্কার ওয়াইল্ডকে; ভালোবাসেন পাগলের মতো। আর সেই
ভালোবাসা জানাতে অস্কার ওয়াইল্ডের সমাধিসৌধে তাঁরা রাখছেন নানা চিহ্ন। ভক্তদের চুম্বনে কবির সৌধ ভরে গেছে লিপস্টিকের দাগে। সেই দাগ এমনই অমোচনীয় যে পানি দিয়ে ধুয়েও মোছা যায় না। ফলে জনপ্রিয় এই কবির সমাধিসৌধ হারাচ্ছে তাঁর জৌলুশ।
প্রায় ১০০ বছর ধরেই কবির সমাধিসৌধে চলছে ভক্তদের ভালোবাসার এই অত্যাচার। তবে দেরিতে হলেও টনক নড়েছে সরকারের। তাই সমাধিসৌধকে রক্ষা করার কাজ শুরু হয়েছে। অস্কার ওয়াইল্ডের সমাধিসৌধের চারপাশে এবার তুলে দেওয়া হচ্ছে কাচের দেয়াল। আর তাই ইচ্ছা করলেই যখন-তখন ভক্তরা চুমু খেতে পারবেন না কবির সমাধিতে।
গতকাল বুধবার ছিল অস্কার ওয়াইল্ডের ১১১তম মৃত্যুবার্ষিকী। ব্রিটিশ অভিনেতা রুপার্ট এভেট ওইদিন পেয়ার লেশেঁ অবস্থিত তাঁর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে যান। তিনি বলেন, ঊনবিংশ শতাব্দীর সব সংস্কৃতির ও ঐতিহ্যের ধারক হলো ফ্রান্স। অস্কার ওয়াইল্ড চেয়েছিলেন, ফ্রান্সেই তাঁর সমাধি হোক। জীবনের শেষ দিকে যুক্তরাজ্যের প্রতি তিনি তাঁর ঘৃণা প্রকাশ করতেন। আর সেই সমাধিকে রক্ষা করতে সরকার অস্কার ওয়াইল্ডের সমাধির সংস্কার প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। এ দায়িত্ব পেয়েছেন তাঁর নাতি মার্লিন হল্যান্ড। মার্লিন বলেন, এটি এখন ঐতিহাসিক সৌধে পরিণত হচ্ছে। যারা এর ক্ষতি করবে, তাদের জরিমানা হবে। তিনি বলেন, ‘আজকের এ দিনটি খুবই তাত্পর্যময়। অস্কার ওয়াইল্ডের সৌধ কীভাবে সংরক্ষণ করা হবে, আজ থেকে সে চিন্তা দূর হয়ে গেল।’
আইরিশ কবি অস্কার ওয়াইল্ড প্যারিসে মারা যান। সে সময় তিনি ছিলেন কপর্দকশূন্য। তাঁর বন্ধুরা মিলে প্যারিসের বাইরে বেগন নামে একটি ছোট শহরে তড়িঘড়ি করে তাঁকে সমাহিত করেন। সে সময় দরিদ্রদের সেখানে সমাহিত করা হতো। পরে অস্কার ওয়াইল্ডের লেখা বই বিক্রি করে তাঁদের হাতে অর্থ চলে আসে। তাই প্যারিসের বিখ্যাত পেয়ার লেশঁ সমাধিক্ষেত্রে তাঁকে আবার সমাহিত করা হয়। এখানে ফ্রান্সের কবি জিম মরিসন, ইডিথ পিয়াফ ও নাট্যকার মলিয়েরের সমাধিও রয়েছে। রয়টার্স।
No comments:
Post a Comment