Accounting

হিসাববিজ্ঞানে ভাল রেজাল্টে আগ্রহী
এস.এস.সি , এইচ.এস.সি ও অনার্সের হিসাববিজ্ঞান নিয়ে সমস্যা আছে...
দেরী না করে নিচের লিংকে ক্লিক কর

Honours & Masters Result

নিচের লিংকে ক্লিক করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনুষ্ঠিত অনার্স ও মাস্টার্স এর রেজাল্ট পেয়ে যাবে

রাশিফল জানতে চান?

তাহলে এখনি নিচের লিংকে ক্লিক করে আপনার রাশি সম্পর্কে জেনে নিন। ২০১২ সালটি আপনার কেমন যাবে জানতে এখনি ক্লিক করুণ.....

Sunday, April 24, 2011

চুল পড়া নিয়ে কিছু কথা

চুলের যত্নে মানুষ কমবেশিই আগ্রহী। কারণ চুল মানুষের সৌন্দর্য্য বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু ধুলোবালি, আবহাওয়া ও অন্যান্য বিভিন্ন কারণে মানুষের চুলের অবস্থা মাঝে মাঝে করুণ অবস্থায় রূপ নেয়। যে কারণে অনেকের মাথা টাকে রূপান্তর হয়। আসুন জেনে নেই চুল পড়া নিয়ে কিছু তথ্য। যা আমাদের চুলের যত্ন নিতে সাহায্য করবে। 

অল্প বয়সে চুল পড়াঃ 
চুল ত্বকেরই অঙ্গ। ত্বকের উপরিতলের কোষ বা এপিডারমাল সেল থেকে চুলের উৎপত্তি। হেয়ার ফলিকল তৈরি হয় এপিডারমাল সেল থেকে। হেয়ার ফলিকনের একেবারে গভীরতম অংশ বা হেয়ার বালবের বিভাজনে তৈরি হয় নতুন নতুন কোষ। এই নবীন কোষগুলোতে বিশেষ ধরনের প্রোটিন জমতে থাকে, যা ত্বকের সাধারণ প্রোটিন থেকে কিছুটা আলাদা শক্ত। হেয়ার বালবের মধ্যের মেলানোসাইট চুলের রঙ সরবরাহ করে। চুলের পুষ্টি আসে হেয়ার বালবের শিরা, উপশিরা থেকে। হেয়ার বালবের থেকে তৈরি হওয়া কোষগুলো একত্রে একটি দন্তের মতো উপরিতলের দিকে বাড়তে থাকে। জীবন্ত কোষগুলো ক্রমশ মৃত্যুর দিকে এগোয়, জমে ওঠা শক্ত কেরাটিনের একটি টালিতে পরিণত হয়। চুলের এই দন্ডের চারপাশে হেয়ার ফলিকদের দেয়াল লেপটে থাকে। ত্বকের উপরিভাগের কাছে এসে হেয়ার শ্যাফট তার চারপাশের দেয়াল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে একটি মোটা কালো সুতার মতো ত্বকের উপভিাগ থেকে বেরিয়ে আসে। তাই চুলের পুষ্টি সঞ্চালন করতে হলে হেয়ার ফলিকলের নিচে, ত্বকের গভীরে হেয়ার বালবে রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে হবে এবং সেই রক্তে চুল তৈরিতে প্রয়োজনীয় উপাদান ঠিকভাবে থাকতে হবে। আগাগোড়া হেয়ার ফলিকল বা চুল তৈরির কারখানাটিও ঠিক থাকা দরকার।

ত্বকের গভীরে যেখানে হেয়ার বালবের কোষগুলো রয়েছে সেখান থেকে ক্রমাগত নতুন কোষও সৃষ্টি হয়ে চুলের দন্ডের দোড়ার দিকে যুক্ত হচ্ছে এবং দন্ডটিকে ক্রমাগত উপর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। জীবন্ত কোষগুলো উপরের দিকে ওঠার সময় কেরাটিন সঞ্চয় করছে, শক্ত হচ্ছে, মৃতকোষে পরিণত হচ্ছে। এই মৃত কোষের সমষ্টিই চুল হিসেবে ত্বকের উপরিভাগে ক্রমাগত এগিয়ে এসে অবশেষে ত্বকের বাইরে চুল হিসেবে দেখা যাচ্ছে।

অল্প বয়সে টাক পড়া

অল্প বয়সে টাক পড়ার নানা কারণ রয়েছে। পুরুষদের জন্য এন্ড্রোজেনিক এলোপিসিয়া শুরু হয় কপালের দুপাশে রগের কাছে। তারপর ক্রমশ বাড়তে বাড়তে সামনে চাঁদিতে ছড়িয়ে পড়ে। এই মেল সেক্স হরমোন টেস্টোস্টেরন জেনেটিক প্রভাবের কারণে হয়। চুলের বৃদ্ধি অনেকাংশে টেস্টোস্টেরনের ওপর নির্ভরশীল। চুলের গোড়ায় কিছু রিসেপ্টর থাকে যেগুলো এই হরমোনোর উপস্থিতিতে চুলের জীবন নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে একই মাত্রায় হরমোন থাকা সত্ত্বেও চুলের তারতম্য হয়। জন্যই পুরুষদের ক্ষেত্রে বয়ঃসন্ধিকালে সামনের চুল ঝরে যেতে থাকে। অবশ্য চুল পড়ার জন্য থাইরয়েড গ্রন্থির অসুখ, রক্তস্বল্পতা, ডিম্বাশয়ের অসুখ বা অন্য কোনো এন্ডোক্রাইন অসুখও হতে পারে। বর্তমানে চুল পড়া বা টাকের আধুনিক চিকিৎসা এসেছে। বাজারে প্রচলিত শ্যাম্পুর বিজ্ঞাপনে মোহিত না হয়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে সঠিক চিকিৎসা নেয়া প্রয়োজন।

রূপচর্চার নামে নানা অপ্রয়োজনীয় জিনিস ব্যবহারে ত্বক চুলের ক্ষতি হচ্ছে। পরিবেশ দূষণ, বিভিন্ন কেমিক্যাল ক্ষার ইনসেকটিসাইড ব্যবহার, পানি দূষণ, বায়ুদূষণ ইত্যাদিও পরোক্ষভাবে চুল পড়ার জন্য দায়ী। আধুনিক জীবনযাত্রা স্বাভাবিক সৌন্দর্যের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অবশ্য আশার কথা এই যে, সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে এর প্রতিকার আছে।


সুন্দর চুলের জন্য 
চুল নিয়ে আজকাল অনেকেরই ভাবনার অন্ত নেই। ভালো স্বাস্থ্য, সুন্দর চুল সবারই কাম্য। গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত সমান ভারী চুলকে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুল বলা যায়। ছাড়া চকচকে কালো চুল এবং মাথার ত্বক পরিষ্কার থাকতে হবে।

স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুলের জন্য প্রয়োজন সুষম খাদ্য। সঠিক পরিমাণে আমিষ, শর্করা, চর্বি, ভিটামিন খনিজসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। খাদ্য তালিকায় থাকতে হবে প্রচুর শাকসবজি, ফল সালাদ। খনিজ পদার্থ ভিটামিনের অভাবে চুলের স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে যায়, চুল ঝরে পড়ে।

সঠিক পরিমাণে পানি পান করলে শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ বেরিয়ে যায়।
নিয়মিত ব্যায়াম করলে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়।

মাথার ত্বক নিয়মিত পরিষ্কার রাখাও প্রয়োজন।

প্রোটিন এবং আপনার চুল
প্রোটিনের অভাবে চুলের রঙ প্রথমে নষ্ট হয়ে যায়। চুল লালচে বাদামি হতে থাকে। পরে চুল ঝরে যায় এবং চুলের আগা ফাটতে থাকে। কেরাটিনের অভাবে চুল ফেটে যায়। খাদ্য তালিকায় মাছ, গোশত, ডিম, দুধ, ডাল, দই পনির ইত্যাদি থাকা জরুরি এবং কেরাটিন তৈরিতে সহায়তা করে।

ভিটামিন এবং আপনার চুল
ভিটামিন’-এর অভাবে চুল রুক্ষ প্রাণহীন হয়ে ওঠে। আবার অতিরিক্ত ভিটামিন’-এর জন্য চুল ঝরে পড়তে পারে। অতিরিক্ত ভিটামিন’-এর জন্য অল্প অল্প করে চুল জায়গায় জায়গায় ওঠে গিয়ে টাক পড়ে যায়। খাদ্য তালিকায় দুধ, গাজর, মুলা, সবুজ শাকসবজি থাকা প্রয়োজন। ভিটামিনসি অভাবে চুল খসখসে শুষ্ক হয়ে ওঠে। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় তাই লেবুজাতীয় ফল, কমলালেবু, কেনু, মুসাম্বি ইত্যাদি থাকা প্রয়োজন।

ভিটামিনবিচুলকে চকচকে ঘন করে তোলে। শস্যদানা, দুধ, ডিম, কলা, বাদাম, কলিজা ডালে রয়েছে ভিটামিনবি প্রতিদিন ভিটামিনসমৃদ্ধ খাবার খেলে চুল ভালো হবে এবং চুল ঝরবে না।

স্নেহপদার্থ এবং আপনার চুল
চুল তৈলাক্ত হলে প্রাণীজ চর্বিজাতীয় খাবার পরিহার করুন। উদ্ভিজ্জ তেল খেতে পারেন। চর্বিসমৃদ্ধ, গরু খাসির গোশত কম খাবেন। স্কিমড দুধ বা ননী তোলা দুধ, পনির দই খেতে পারেন।

স্বাস্থ্যহীন চুলের কারণ
সুষম খাবার না খাওয়া স্বাস্থ্যহীন চুলের প্রধান কারণ,খাদ্য তালিকা সঠিক না হওয়ার কারণে চুল ঝরে পড়তে পারে। ব্যাপারে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাবার খাওয়া ভিটামিন গ্রহণ করা প্রয়োজন।
দীর্ঘ সময় হেলমেট, টুপি ইত্যাদি পড়ে থাকা।
চুলে নানা কেমিক্যাল ডাই ব্যবহার করা।
সঠিকভাবে চুল পরিষ্কার না করা।
খুশকি অন্যান্য রোগ।
অতিরিক্ত রোদে বের হওয়া এবং চুল ভেজা থাকা।
শারীরিক অসুখ-বিসুখ, মানসিক চাপ।
ঘুম না হওয়া এবং হরমোনের তারতম্যজনিত কারণ।

চুল স্বাস্থ্যহীন হয়ে পড়লে এবং চুল ঝরে পড়লে এর কারণ খুঁজে বের করতে হবে এবং সঠিক চিকিৎসা প্রয়োজন। সুষম আহার, চুলের সঠিক পরিচর্যা এবং প্রয়োজনে কিছু ওষুধের ব্যবহারে চুল স্বাস্থ্যোজ্জ্বল হয়ে উঠতে পারে।


চুলপড়া নিয়ে কিছু কথা 
বিভিন্ন বয়সের নারী পুরুষ বর্তমানে চুল পড়ার সমস্যায় আক্রান্ত। টিনএজার থেকে মধ্যবয়সী অনেকেরই চুল ঝরে যাচ্ছে। ছেলেদের মাথার সামনের দিকে চুল ফাঁকা হয়ে টাক দেখা দিচ্ছে। মেয়েদের বেণী চিকন হয়ে যাচ্ছে। যেহেতু বর্তমানে অনেকেরই চুল পড়ার সমস্যা রয়েছে, তাই নানা রকম বিজ্ঞাপন দেখানো হচ্ছে মিডিয়াগুলোতে। এসব পণ্য বিজ্ঞানসম্মত নয় এবং কেউ উপকৃত হয়েছেন বলে জানা যায়নি। ঠিক একই অভিযোগ রয়েছে রঙ ফর্সাকারী ক্রিমের প্রচারের ব্যাপারে। চুল পড়তে থাকলে এর কারণ নির্ণয় প্রতিকার করা প্রয়োজন। বর্তমানে চুল পড়ার চিকিৎসা অনেক অগ্রগতি হয়েছে। তবে প্রথমে চুল পড়ার কারণ নির্ণয় করা প্রয়োজন। চুল পড়ার নানা কারণের মধ্যে রয়েছে খুশকি মাথায় ত্বকের নানা সংক্রমণ প্রদাহ, অতিরিক্ত ধূলা-ময়লার কাজ করা, চুল সঠিকভাবে পরিষ্কার না রাখা, হরমোনের তারতম্য, সঠিকভাবে চুলের পরিচর্যা না করা, সুষম খাদ্য গ্রহণ না করা, অতিরিক্ত মানসিক চাপ, সময় মতো পর্যাপ্ত না ঘুমানো এবং নানা কেমিক্যালের ব্যবহার। যেমন জেল, স্প্রে, চুল সোজা বা কোঁকড়ানোর জন্য হিট দেয়া, রঙ করা বংশগত।

চুল পড়ার কারণ নির্ণয়ের রোগীর ইতিহাস পর্যালোচনা করে নানা রকম পরীক্ষা হেয়ার অ্যানালাইসিস করা হয়। কারণ অনুযায়ী রোগীকে চিকিৎসা দেয়া প্রয়োজন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে চুল পড়ার কারণ প্রতিকার করতে পারলেই চুল পড়া বন্ধ হয়। এখানে সঠিক তেল শ্যাম্পুর ভূমিকাও অনেক। চুলপড়া বন্ধ হওয়ার পরে নতুন চুল গড়ানোর জন্য চিকিৎসা দেয়া দরকার। এক্ষেত্রে মিনক্সিডিল বা প্রয়োজন মতো ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়ে থাকে।

ছেলেদের চুল পড়া বা টাকের ব্যাপারে বলতে গেলে একটা কথা না বললেই নয়, বর্তমানে অল্প বয়সী যাদের চুল পড়ে যাচ্ছে তাদের সঠিক চিকিৎসার অবশ্যই প্রয়োজন। কারণ তাতে টাক পড়া রোধ করা সম্ভব হবে। মানসিক চাপ কমালে নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে চুল পড়া বন্ধ করা সম্ভব নতুন চুল গজাতে সহায়তা করা যায়। তাই অল্প বয়সীরা সতর্ক হোন চিকিৎসা নিন।


পুরুষের চুল পড়া 
চুল পড়া একটি স্পর্শকাতর সমস্যা। ছেলেদের চুল পড়ে যাওয়া বা টাক সমস্যা নিয়ে অনেকেই বিব্রত বা বিরক্ত। চুল পড়ার কারণ নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে বা হচ্ছে। চিকিৎসাশাস্ত্রে বলা হয়, চুল পড়ার কারণ বংশগত বা হরমোনজনিত। ছেলেদের চুল পড়া বা এনড্রোজেনিক এলোপিসিয়ার মূল কারণ ডাইহাইড্রোক্সি টেসস্টোসস্টেরন বা ডিএইচটি। ডিএইচটি একটি পুরুষ হরমোন। পুরুষ হরমোন টেসস্টোসস্টেরন থেকে আলফারিজাকটেজ এনজাইমের সাহায্যে তৈরি হয় ডিএইচটি। ডিএইচটি চুলের ফলিকলের গোড়ায় গিয়ে এদের বৃদ্ধি রোধ করে এবং রক্ত সঞ্চালন কমিয়ে দেয়। এভাবেই চুল পড়তে শুরু করে। সুতরাং ডিএইচটি বেড়ে গেলে চুল পড়তে শুরু করে এবং একপর্যায়ে টাকের সৃষ্টি হয়।

চুল বৃদ্ধি বা গজানোর জন্য একটি চক্র বা চুলের জীবন চক্র রয়েছে। এই চক্রের তিনটি পর্যায় রয়েছে। বৃদ্ধির সময়কে বলে এনাজেন। এনাজেন থেকে বছর স্থায়ী হয়। মাথার ৯০ শতাংশ চুল এনাজেন বা বৃদ্ধি হতে থাকে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ক্যাটাজেন। এটি একটি অস্থায়ী পর্যায়। এটি কয়েক সপ্তাহ স্থায়ী হয়। সর্বশেষ পর্যায় টেলোজেন। টেলোজেন থেকে মাস স্থায়ী হয়। সময় কিছু চুল পড়ে যায় এবং ওই সব ফসিকল থেকে নতুন চুল গজায়। টেলোজেন পর্যায় দীর্ঘতর হলে চুল বেশি পড়ে যায়। ছাড়া চুলের ফসিকল শুকিয়ে গেলে নতুন চুল নাও গজাতে পারে। ডিএইচটিকে বাধা দেয় এমন ওষুধ ব্যবহারে চুল পড়া রোধ করা যেতে পারে। শরীরের ডিএইচটি মাত্রা নিয়ন্ত্রিত হলে চুল পড়া কমবে। বর্তমানে ধরনের ওষুধ ব্যবহারে চুল পড়ার চিকিৎসা চলছে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এসব ওষুধ ব্যবহার করা উচিত।


ডাঃ ওয়ানাইজা
চেম্বারঃ জেনারেল মেডিক্যাল হাসপাতাল (প্রাঃ) লিঃ, ১০৩, এলিফ্যান্ট রোড (তৃতীয় তলা), বাটা সিগন্যালের পশ্চিম দিকে, ঢাকা।
দৈনিক নয়া দিগন্ত, ১৯ এপ্রিল ২০০৯।

No comments:

Post a Comment