দাঁতের যত্নে আমরা কত কিছুই না করি। কিন্তু তারপরেও সমস্যায় পড়তে হয়। সমস্যাগুলো অনেক সময় বিব্রতকর হয়ে দাঁড়ায়। ফলে ডাক্তারের শরনাপন্ন হতে হয়। তবে নিজ থেকে সতর্ক থাকলে অনেক সমস্যাই সহজে দূর করা যায়। চলুন না কিছু টিপস্ জেনে রাখি এবং নিচের ডাক্তারের আলাপচারিতা থেকে মূল্যবান বিষয়গুলো নোট করে নেই........
সাধারণ ভাবে শিশুর দাঁত ওঠার পর থেকেই যত্ন শুরু করা উচিত। শিশুকে প্রথম প্রথম বাবা - মা কিংবা অভিভাবককে দাঁত মেজে দিতে হবে। তারপর সে নিজেই উৎসাহিত হয়ে এগিয়ে আসবে। শিশুরা সব সময় বাবা মায়ের অনুসরণ করে থাকে। কাজেই বাবা - মা কিংবা অভিভাবকরা যদি শিশুর সামনে দাঁত মাজেন তবে সেও বেশ উৎসাহিত হয়ে এগিয়ে আসবে। শিশুর দাঁত মাজার জন্য তার ছোট ব্রাশে অধিক পরিমাণে টুথ পেস্ট দেয়া ঠিক হবে না। সাধারণ ভাবে শিশুর ব্রাশে মটর দানার চেয়ে বেশি পেস্ট দেয়া উচিত নয়।কারণ পেস্টের পরিমাণ বেশি হলে শিশুর মুখ ফেনায় ভর্তি হয়ে যাবে এবং ব্রাশ করা কষ্টকর হবে। এ ছাড়া শিশুটি ব্রাশ করার সময়
পেস্ট যেন গিলে না ফেলে বরং তা বের করে দেয় সে দিকে নজর রাখতে হবে। তো এই দাঁতের যত্ন কিভাবে নেয়া উচিত সে ব্যাপারে ঢাকার বিশিষ্ট এবং অভিজ্ঞ দন্ত চিকিৎসক, মেট্রোপলিটান ডেন্টাল ক্লিনিকের মালিক ডাঃ আবদুল্লাহ খানের সাথে আলাপ হয়েছিলো।এখানে তাঁর সে সাক্ষাৎকারটি উপস্থাপন করা হলো
সাধারণ ভাবে শিশুর দাঁত ওঠার পর থেকেই যত্ন শুরু করা উচিত। শিশুকে প্রথম প্রথম বাবা - মা কিংবা অভিভাবককে দাঁত মেজে দিতে হবে। তারপর সে নিজেই উৎসাহিত হয়ে এগিয়ে আসবে। শিশুরা সব সময় বাবা মায়ের অনুসরণ করে থাকে। কাজেই বাবা - মা কিংবা অভিভাবকরা যদি শিশুর সামনে দাঁত মাজেন তবে সেও বেশ উৎসাহিত হয়ে এগিয়ে আসবে। শিশুর দাঁত মাজার জন্য তার ছোট ব্রাশে অধিক পরিমাণে টুথ পেস্ট দেয়া ঠিক হবে না। সাধারণ ভাবে শিশুর ব্রাশে মটর দানার চেয়ে বেশি পেস্ট দেয়া উচিত নয়।কারণ পেস্টের পরিমাণ বেশি হলে শিশুর মুখ ফেনায় ভর্তি হয়ে যাবে এবং ব্রাশ করা কষ্টকর হবে। এ ছাড়া শিশুটি ব্রাশ করার সময়
পেস্ট যেন গিলে না ফেলে বরং তা বের করে দেয় সে দিকে নজর রাখতে হবে। তো এই দাঁতের যত্ন কিভাবে নেয়া উচিত সে ব্যাপারে ঢাকার বিশিষ্ট এবং অভিজ্ঞ দন্ত চিকিৎসক, মেট্রোপলিটান ডেন্টাল ক্লিনিকের মালিক ডাঃ আবদুল্লাহ খানের সাথে আলাপ হয়েছিলো।এখানে তাঁর সে সাক্ষাৎকারটি উপস্থাপন করা হলো
ডাঃ আবদুল্লাহ খান: দাঁতের যত্নের কথা বলতে গেলে প্রথম যে কথাটা আসে তা হচ্ছে, খাওয়া-দাওয়ার অভ্যাস । অর্থাৎ খাওয়া-দাওয়ার অভ্যাসের সাথে দাঁতের স্বাস্থ্র অনেকখানি নির্ভরশীল । যারা বেশি বেশি খান এবং খাওয়া দাওয়ার পরে দাঁত সুন্দর করে পরিষ্কার করেন না এবং দাঁতে খাবার লেগে থাকে, তাদের দাঁত এবং মাড়ি খুব সহজেই নষ্ট হতে পারে । সুতরাং খাওয়া দাওয়ার পরেই ভালো করে দাঁত এবং মুখ পরিষ্কার করতে হবে এটা যেমন গুরুত্বপূর্ণ; তেমনিভাবে কি খাওয়া হচ্ছে তাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শাক-শব্জি, ফলমূল ও আঁশ যুক্ত খাবার এগুলো বেশি খাওয়া ভালো আর মিষ্টি জাতীয় খাবার যতটুকু সম্ভব কম খাওয়াই ভালো। এর মধ্যে বরং আমিষ জাতীয় খাবারের উপরে প্রাধান্য দেয়া উচিত। এখন কথা হচ্ছে আপনি কখন এবং কিভাবে দাঁত ব্রাশ করছেন ? দাঁতের যত্নের জন্য নিয়মিত এবং নিয়মমত দাঁত ব্রাশ জরুরী । আর সেটা হলো রাতে ঘুমের আগে এবং সকালে নাস্তার পরে ব্রাশ করা দরকার। আমরা মনে করি, এই দুইটি সময়ে যিনি দাঁত পরিষ্কার করবেন তার দাঁতের সমস্যা অনেক ক্ষেত্রেই কম হবে । তৃতীয় যে বিষয়টা আমাদের রিকমেন্ডেশন থাকবে সেটা হচ্ছে, অন্তত বছরে একবার ডেন্টিস্টের কাছে গিয়ে দাঁত এবং মুখ পরীক্ষা করাবেন। কারণ প্রাথমিক অবস্থায় দাঁত বা মুখের কোন সমস্যা ধরা পড়লে চিকিৎসার মাধ্যমে তা দ্রুত সারিয়ে ফেলা সম্ভব।
রেডিও তেহরান : বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে দাঁত মাজার জন্য গুল বা কাঠ কয়লা ব্যবহার করার প্রচলন আছে এবং দাঁতে মেসওয়াক ব্যবহার করা হয়। এগুলোকে আপনি কতোটা বিজ্ঞান সম্মত বলবেন?
ডাঃ আবদুল্লাহ খানঃ দাঁত পরিষ্কার করার জন্য কোন ক্রমেই গুল, কয়লা, ছাই, বালি এগুলো ব্যবহার করা ঠিক নয় এতে বরং দাঁত ক্ষতিগ্রস্ত হয় ।
আর মেসওয়াক ব্যবহারের ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে যে মেসওয়াক দ্বারা দাঁতের প্রতিটি অংশ যেনো পরিস্কার করা হয়। অধিকাংশ সময়ই মেসওয়াক ব্যবহারকারী তা করতে পারেন না বা মেসওয়াক দিয়ে এভাবে দাঁত পরিষ্কার করা সম্ভব হয়ে উঠে না। ফলে মেসওয়াক ব্যবহার করা সত্ত্বেও দাঁতের ক্ষতি হয় বলে দেখা যায়। আর এসব বিবেচনা করে ব্রাশ ও পেস্টই হলো দাঁতে পরিস্কার রাখার জন্য সবচেয়ে সহজলভ্য এবং দাঁতের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
রেডিও তেহরান : দেখুন ডাক্তার আবদুল্লাহ খান, আমরা অনেকেই দাঁতের যত্নের জন্য ব্রাশ ও পেস্ট ব্যবহার করি। কিন্ত সমস্যা হলো, ব্রাশ সঠিক ভাবে ব্যবহার করার নিয়ম আমরা অনেকেই জানি না।আচ্ছা, ব্রাশ ব্যবহারের সঠিক নিয়মটি কি হবে
ডাঃ আবদুল্লাহ খানঃ প্রথম কথা হচ্ছে ব্রাশ ব্যবহার করতে হবে রাতে ঘুমের আগে ও সকালে নাশতার পরে। যদি দরকার হয় তাহলে দুপুরে খাওয়ার পরও ব্রাশ করা উচিত । আমরা সাধারণভাবে ডানে, বামে ব্রাশ চালিয়ে দাঁত পরিস্কার করার চেষ্টা করি । কিন্ত সবচে ভালো হয় যদি উপর থেকে নিচে এবং নিচ থেকে উপরে ব্রাশ চালানো হয় । তাহলে দাঁতগুলোর ফাঁকের মধ্যে যে সমস্ত খাবার বা ময়লা জমা হয়ে থাকে সেগুলো পরিষ্কার হয়ে যায় ।
রেডিও তেহরান : সউদি আরবের রিয়াদে প্রবাসী রেডিও তেহরানের শ্রোতা ভাই আমিমুল ইসলাম টেলিফোনে জানিয়েছেন, তার দাঁতের গোড়া দিয়ে রক্ত পড়ে এবং চোখে ব্যাথা হয়। এখন এই শ্রোতা ভাইকে এর হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কি করতে হবে ?
ডাঃ আবদুল্লাহ খানঃ ভাই আমিমুল ইসলামের জন্য বলা হচ্ছে যে দাঁতের গোড়া দিয়ে কেন রক্ত যাচ্ছে সেটা দেখতে হবে । দাঁতের গোড়ায় যে মাড়ি আছে সে মাড়ির অবস্থাটা কি ? যদি মাড়ি রোগাক্রান্ত থাকে তাহলে দাঁতের গোড়া দিয়ে রক্ত বের হয় । আর সেটা এজন্যই হতে পারে যে সুন্দর করে দাঁত পরিষ্কার না করার কারণে দাঁতের গোড়ায় ময়লা জমে এবং সে ময়লা আসে- আসে- শক্ত হয়ে পাথরের মতো হয় । আমরা তাকে কাটার বলি এবং আল্টিমেইটলি এখানে জিঞ্জিভাইট হয় । আর জিঞ্জিভাইটিস হলে দাঁতের গোড়া দিয়ে রক্ত পড়বে । এ ছাড়া ডায়াবেটিসের কারণে দাঁতের মাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে সেখান দিয়ে রক্ত পড়তে পারে। রক্তরোগ বা রক্ত সম্পর্কিত কোনো সমস্যা থাকলেও দাঁতের গোড়া দিয়ে রক্ত পড়তে পারে ।
রেডিও তেহরান : বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে দাঁতের গোড়া দিয়ে রক্ত পড়ায় অনেকেই ভুগে থাকেন। দাঁতের এ জাতীয় রোগ দেখা দিলে কি করা উচিত?
ডাঃ আবদুল্লাহ খানঃ এ জাতীয় রোগের জন্য প্রথম কাজ হচ্ছে নিকটস' একজন ডেন্টিস্টের কাছে যাওয়া ও তার পরামর্শ নেয়া । ডেন্টিস্ট যদি দেখে যে রোগীর দাঁতের গোড়া দিয়ে রক্ত যাওয়ার কারণ হচ্ছে মাড়ীর রোগ । তাহলে এই মাড়ীর রোগের চিকিৎসা করবেন । স্বাধারণত এ ক্ষেত্রে স্কেলিং করা হয় । অর্থাৎ দাঁতের গোড়াকে সুন্দর করে পরিষ্কার করা হয় । আর এরপরে দনন্ত চিকিৎসক কিছু ওষুধ পত্র দিতে পরেন খাওয়ার জন্য এবং কিভাবে দাঁতের যত্ন নিবেন এ পরামর্শও তিনি দিবেন। তবে আপাতত আমাদের শ্রোতাভাইয়ের জন্য পরামর্শ হলো তিনি ভালো করে দাঁত ব্রাশ করবেন । বিশেষ করে রাতে ঘুমের আগে এবং সকালে নাশ্তার পরে । আর দ্বিতীয় কাজটা হবে গরম লবন পানি দিয়ে দিনে অন্তত: ৪/৫ বার কুলি করবেন । এটা করলে হয়তো আমাদের শ্রোতাভাই উপকৃত হবেন ।
রেডিও তেহরান : ডা. আবদুল্লাহ এই শ্রোতা ভাই আরো একটি উপসর্গের কথা জানিয়েছেন, আর তা হলো তার চোখের উপরে ব্যাথা করে। দাঁতের গোড়া দিয়ে রক্ত পড়ার কারণেই কি তার চোখের উপরে ব্যাথা করে?
ডাঃ আবদুল্লাহ খানঃ দাঁতের গোড়া দিয়ে রক্ত যাওয়ার সাথে চোখের উপরী ভাগের কোন সম্পর্ক আছে বলে আমার ঠিক জানা নেই এবং আমার মনে হয়না এটা দাঁতের সাথে সম্পর্কিত ।রেডিও তেহরান : ডা. আবদুল্লাহ খান দাঁতের যত্নের যে কথাটি বলা হয় তা কোন বয়স থেকে শুরু করা উচিত?
ডাঃ আবদুল্লাহ খানঃ একটা শিশুর দাঁত যখন ১/২টা উঠতে শুরু করে তখন থেকেই মূলত দাঁতের যত্ন নিতে হবে এবং সেই যত্নটা শিশু নিজে নিতে পারবে না । শিশুর বাবা, মা সেই যত্ন নিবে এবং খেয়াল রাখতে হবে যাতে ঐ বয়সেও শিশুর দাঁতে দুধের অংশও লেগে না থাকে । তাহলে সেখান থেকে দাঁত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে । আর দাঁতগুলো যখন ওঠে যাবে তখন অবশ্যই তাকে ব্রাশ দিতে হবে এবং সেই ব্রাশ দিয়ে সে নিজে দাঁত পরিষ্কার করতে না পারলেও তার মা, বাবা তার দাঁত পরিষ্কার করে দিবেন ।
রেডিও তেহরান : দাঁতের যত্ন প্রসংগে আমাদের আর কিছু বলবেন কি?
ডাঃ আব্দুল্লাহ খান : আমার পরামর্শ হলো, আপনারা প্রত্যেকেই দাঁতের যত্ন নিবেন আর এটা খুব কষ্টকর কিছু নয় । খাওয়া দাওয়ার পরে দাঁত ভালো করে পরিষ্কার রাখা জরুরী এবং কোনভাবেই খাবার মুখে নিয়ে ঘুমানো ঠিক নয় । আর যখনই দাঁতের কোন রকম সমস্যা বোধ করবেন সাথে সাথে নিকটস্থ দাঁতের ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।From: bangla.irib.ir/
No comments:
Post a Comment